“নিউ লাইফ” হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রা*ন গেলো এক শিশুর

মাননীয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ,

বেদনাহত হৃদয়ে এই চিঠিটি লিখছি। আমার ছোট ভাই, মাত্র ১৪ বছরের একটি জীবন—চিকিৎসার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালের অবহেলা, আর্থিক লালসা ও অমানবিক আচরণের কারণে অকালেই নিভে গেল।

আমরা “নিউ লাইফ” হাসপাতালে (ধানমন্ডি, ঢাকা) ছোট ভাইকে গ্যাস্ট্রোলিভার সমস্যার কারণে ভর্তি করাই। প্রথম দফার অপারেশনের পর রক্তের প্রয়োজন হয়। আমরা ২ ব্যাগ রক্ত দিই, যার মধ্যে একটি ব্যাগ তাদের ব্লাড ব্যাংকে জমা রাখা হয় ভবিষ্যতের জন্য।

পরবর্তীতে একটি আরও বড় অপারেশন হয়, যেটি বলা হয় ৩০ মিনিটের, কিন্তু চলে প্রায় ৩ ঘণ্টা। এর পর হঠাৎ আবার ৩ ব্যাগ রক্তের চাহিদা জানানো হয় এবং আগের জমা রাখা রক্ত ব্যবহারে তারা অস্বীকৃতি জানায়। বাধ্য হয়ে আমরা তাদের থেকেই রক্ত কিনি।

রক্ত দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ করে অতিরিক্ত রক্তপাত শুরু হয়। রোগীর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে, কিন্তু ডাক্তাররা তৎপর হননি। মূল চিকিৎসক সরাসরি না এসে ফোনে নির্দেশ দেন—“অবস্থা খারাপ হলে আইসিইউতে নিয়ে যাও।” আমাদের পরিবারের সদস্যরা ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে জানানো হয়, “শুধু রোগীর বাবা-মাকে বলা হয়েছে, অন্য কাউকে কিছু বলা হবে না।”

রোগীকে আইসিইউতে নেওয়া হয়, কিন্তু দুঃখজনকভাবে সে আর জীবিত ফেরে না।

এরপর আমাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ৭ লক্ষ টাকার বিল—যেখানে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট, ওষুধ, এবং রক্ত কেনাবেচার অসঙ্গতির হিসাব।

আমরা জানতে চাই—

কেন আগেই দান করা রক্ত ব্যবহার করা হল না?

কেন ৩০ মিনিটের অপারেশন ৩ ঘণ্টা স্থায়ী হলো?

কেন ডাক্তাররা জরুরি মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন না?

কেন একটি মাত্র শিশুর প্রাণে এত নিষ্ঠুর অবহেলা?

আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা এবং অনৈতিক বিলিংয়ের সঠিক বিচার দাবি করি।

এই অনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এমন প্রাণহানি আরও ঘটতে থাকবে। একজন অসহায় বাবা তাঁর সন্তানের লাশ নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ ফিরেছেন—এই দৃশ্য যেন আর কোনো বাবা-মাকে দেখতে না হয়।

আশা করছি, আপনি এই ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *